ঢাকাশনিবার , ১৭ মে ২০২৫
  1. ইতিহাস
  2. উলিপুর উপজেলা
  3. এসবি পডকাস্ট (বিভাগ ভিত্তিক)
  4. কুড়িগ্রাম
  5. কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা
  6. খুলনা বিভাগ
  7. চট্টগ্রাম বিভাগ
  8. চাকরি
  9. চিলমারী উপজেলা
  10. জাতীয়
  11. ঢাকা বিভাগ
  12. নাগেশ্বরী উপজেলা
  13. নারী
  14. প্রযুক্তি
  15. ফুলবাড়ী উপজেলা
আজকের সর্বশেষ খবর
Link Copied!

Dr. Rup kumar
Veterinary surgeon ,
Veterinary teaching hospital ,
She-e-bangla Agricultural University,
&
Senior consultant
Vet and pet care
.

যান্ত্রিক দৌড় ঝাপের এই জীবনে ক্ষনিকের শান্তির পরশ এনে দিতে পারে পোষা প্রাণী। শুধু পোষা প্রাণী নয় অবুঝ পশু পাখিই যেনো আমাদের পৃথিবী টাকে আরো সুন্দর আর বৈচিত্রময় করে তুলেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা এই জীব বৈচিত্রকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তারমধ্যে বন বিড়াল মারা একটা পরিচিত ঘটনা।
তাছাড়া ঢাকার মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন সিটিতে পশু হত্যা সকলেরই অবগত। এরা আমাদের দেশেরই সম্পদ। সৃষ্টিকর্তা পৃথিবী টাকে শুধু আমাদের জন্য সৃষ্টি করেননি। এখানে পশু পাখিদেরও সমান অধিকার আছে। তাই আজ আমরা কথা বলবো পশু পাখিদের জীবনের গুরুত্ব বুঝে তাদের জন্য কাজ করে যাওয়া একজনের সাথে।
আজ আমাদের সাথে আছেন ভেটেরিনারি সার্জন ডাক্তার রূপ কুমার, ভেটেরিনারি টিচিং হাসপাতাল, শের. এ. বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা। তাছাড়াও তিনি একজন সিনিয়র কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করছেন ভেট এন্ড পেট কেয়ার এ। প্রথমেই জানতে চাইবো

আপনি কেন ভেটেরিনারি পেশা বেছে নিয়েছেন?
উত্তর: জীবনে সেবার বিকল্প নেই। এটা শুধু অন্যকে সাহায্য করা নয়,নিজের মানসিক উন্নতিও করে। বরাবর ই আমি এই সেবার লাইন এ আসতে চেয়েছিলাম। মানুষের সেবার জন্য লক্ষ লক্ষ ডাক্তার আছে। খেয়াল করলে দেখবেন বিনা চিকিৎসায় মানুষ মরার সংখ্যা নেই বললেই চলে। কিন্তু অবুঝ প্রাণী গুলো যেখানে সেখানে মোর পরে আছে,চিকিৎসার অভাবে। বাড়িতে বাবা মা এখনো পশু পাখি লালন পালন করে,এবং নিজের সন্তানের মতন ই দেখে। তাই আমার ও ওদের প্রতি একটা ভালোবাসা কাজ করতো। সেখান থেকেই ভেটেরিনারি তে আসা আর কি।

পশু চিকিৎসার ক্ষেত্রে আপনার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী?
উত্তর: সব চেয়ে বড়ো সমস্যা হচ্ছে আমার পেশেন্ট কথা বলতে পারে না। তার কি সমস্যা সেটা আমাদের কে বুঝে নিতে হয়। দ্বিতীয় সমস্যা হলো,আমি যে মালিকের থেকে ইনফরমেশন নেবো,আমাদের বেশিরভাগ পেট ওনার তথ্য ঠিক মতো দিতে পারে না। হয়তো তারা তথ্য ঠিকমতো গ্যাদার করতে পারেনা, নয়তো বুঝতে পারেনা কি সমস্যা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সব চেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জ যে আমরা কোন জায়গা থেকে শুরু করবো। সময় নিতে হয়,পেট ওনারের এর সাথে কথা বলতে হয়, তাদের ছাইকোলোজির সাথে ম্যাচ করতে হয়। তথ্য নিতে হয় আর তার বেস ধরেই চিকিৎসা শুরু করতে হয়।

কোন ধরনের প্রাণীর চিকিৎসা আপনি বেশি করেন?

উত্তর: আমি মেইনলি পেট এনিম্যাল এর চিকিৎসার সুযোগ বেশি পেয়ে থাকি। জেনেরালি ক্যাট এন্ড ডগ। মুসলিম দেশ হওয়ার কারণে আসলে বিড়াল প্রেমীর সংখ্যাই বেশি।

পশুরা তো কথা বলতে পারে না—তাদের রোগ নির্ণয়ে আপনি কীভাবে বুঝে থাকেন?
উত্তর: দেখেন আমাদের যখন পেট বেথা হয় আমরা কি করি? খাওয়াটা স্টপ করে দেই। পশুদের ক্ষেত্রেও ওদের যদি পেট ক্রামপিং হয় বা বেথা হয়,ওরাও খাওয়া অফ করে দেবে। বেথাটা যদি আঘাতজনিত কারণে হয় তাহলে আমরা টাচ করলে পেন সেন্সেশন এর জন্য ওরা চিৎকার করবে। মাথায় বেথা হলে,সেটা তো আঘাতজনিত কারণেই হয়, সেক্ষেত্রে হিস্ট্রি কালেক্ট করে সেখানে টাচ করে পাল্পেশন করে আমাদের নির্ণয় করতে হয়। এমন ভাবে প্রতিটা সমস্যার ই আলাদা আলাদা সিম্পটম আছে জেতার মাধ্যমে নির্ণয় করতে হয়।

গ্রামে ও শহরে পশু চিকিৎসায় কী কী পার্থক্য আছে?
উত্তর: শহরে দ্রুত সময়ের মধ্যে ডক্টরের কাছে নিয়ে যেতে পারছেন। যেকোনো সময়ে ডাক্তার এভেইল্যাবলে ও পাচ্ছেন যেটা গ্রামে সম্ভব হয়না। গ্রামের ভেটেরিনারি সেক্টরটা অনেক দুর্বল। গ্রামের উপজেলা শহর গুলোতে মাত্র দুজন পশু চিকিৎসক থাকেন,কোনো কোনো জায়গায় শুধু একজন থাকে। এমন অবস্থায় ডাক্তারের পক্ষে একটা কভার করা সম্ভব হয়না। এজন্য আমাদের ভেটেরিনারি সেক্টরে ডাক্তার নিয়োগ দেয়া খুব ই জরুরি হয়ে পড়েছে।

হিট স্ট্রোক বা গরমে পশুদের মৃত্যুর হার কতটা?
উত্তর: বাংলাদেশের পার্সপেক্টিভ এ সঠিক ডেটা আমাদের কাছে নেই কারণ আমাদের দেশে ভেটেরিনারি সেক্টর এ প্রপার ইনভেস্টমেন্ট হয়না। হিট স্ট্রোকে কত গুলো পশু মারা গেলো এই তথ্য উপজেলা অফিসে পৌঁছায় না। আর গ্রামে একটা রীতি আছে ,গরু ছাগল অসুস্থ হয়ে গেলে জবাই করে ফেলা হয়। পেট সেক্টরে ইটা হয়না জন্য একটু ইনফরমেশন আছে আমাদের কাছে। ১০টা পেশেন্ট আসলে তারমাঝে ৬ টাই হিট স্ট্রোক থাকে আর ২টার অবস্থা খারাপ হয়ে থাকে নরমালি। সেক্ষেত্রে ১০০ টার মাঝে ১০ তা পেশেন্ট হিট ষ্টোকে মারা যায় বলে ধারণা করতে পারি।

গরমে বিড়ালকে কি খাবার দিতে হবে?
উত্তর : যেহেতু গরম অনেক বেশি, সেহেতু বডি টেম্পারেচার মেইনটেইন করার জন্য দশ থেকে পনেরো শতাংশ খাবার কম প্রয়োজন হবে। আর এই সময়ে ড্রাই ফুডস দেয়া যাবেনা। যতটা সম্ভব হোম মেড খাবার যেমন বয়েল্ড চিকেন,ফিশ এবং প্রচুর পরিমানে পানি খাওয়াতে হবে। যদি একটা বিড়াল ৮০ গ্রাম বা ১০০ গ্রাম পানি খাই,তাহলে সে যেন এর দ্বিগুন পরিমান পানি খায় এই বিষয়টি আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।

কুকুর বিড়ালকে কি এই গরমে কৃমিনাশক খাওয়ানো যাবে?
উত্তর: গরম অনেক বেশি থাকলে আমরা কৃমির ওষুধ না খায়ানোতেই প্রেফার করবো। কিন্তু যদি পশুর অবস্থা খারাপ হয়ে যাই যেমন পায়খানার সাথে কৃমি বের হয় অথবা বমি তাহলে ডিয়ারমিং করতে হবে। এমন সিচুয়েশন এ দিনের যে সময়টাই তাপমাত্রা কম সেই সময়টাতে কৃমির ওষুধ খাওয়াতে হবে। যেমন সকাল বা সন্ধ্যার পর , বা এনিম্যাল কে হাইড্রেট রেখে ডিওয়ার্মিং করতে হবে।

এত গরমে কুকুর বিড়ালকে ভেকসিন কি দেয়া যাবে? ভেকসিন দেয়া গেলে কি শর্ত মানতে হবে??
উত্তর: এই গরমে কুকুর বিড়াল কে ভ্যাকসিন দেয়া যাবেনা এটা একটা মিথ চালু আছে। অবশ্যই কুকুর বিড়াল কে ভ্যাকসিন দেয়া যাবে ,তবে নিয়ে আসার সাথে সাথেই না। তাকে আগে কুল ডাউন করতে হবে,শান্ত করতে হবে, বডি টেম্পারেচার নরমালএ আসতে হবে। তারপর ভ্যাকসিন করতে হবে।

কুকুর বিড়ালের হিট স্ট্রোক হলে কিভাবে বুঝবো? করণীয়গুলো কি হতে পারে?
উত্তর: বিড়ালের হিট স্ট্রোক হলে বিড়াল প্রচুর পরিমানে গা চাটবে,স্যালাইভেশন হবে এবং সেডি জায়গা খুঁজবে লুকানোর জন্য যাতে তাদের বডি টেম্পারেচার কুল ডাউন করার জন্য। কুকুরের ক্ষেত্রে জিভ বার করে শ্বাস নেবে , শ্বাস কষ্ট হবে। কুকুর বিড়াল বোথ ক্ষেত্রেই শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

পোষা প্রাণীদেরকে দেখানোর জন্য আমরা আপনাকে কোথায় বা কিভাবে পাবো?
উত্তর: রবিবার থেকে বৃহস্পতি বার সকাল ৯টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত শের এ বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি টিচিং হসপিটালে বসি। এই সময়ে এসে আমাকে দেখতে পারে। তাছাড়া আমি প্রাইভেট প্রাকটিস করি ভেট এন্ড পেট কেয়ার এ বিকাল ৫: ৩০ থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বসি। এখানেও চাইলে দেখতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে আসতে হবে। এমার্জেন্সি হলে এমার্জেন্সি তে এসেও চিকিৎসা নিতে পারবে। আর যদি নিয়ে না আসতে পারেন সেক্ষেত্রে টেলিফোন সার্ভিস এ সেবা নিতে পারবেন।

অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা কে তার মূল্যবান সময় দেয়ার জন্য। বেঁচে থাকার অধিকার আমাদের সবার আছে। তাই নির্বিচারে পশু হত্যার বিরুদ্ধে আমরা যেন সচেতন হয় এবং একটি সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশে বসবাস করতে পারি।

এই ওয়েবসাইটের সকল কোনো লেখা, ছবি, অডিও বা ভিডিও “পেজ দ্যা নিউজ” কতৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত কপি করা দন্ডনীয়। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করলে কতৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার রাখে।